Developing Screenplay (Writing for Film and Television)

 


Department of Media Studies and Journalism
University of Liberal Arts Bangladesh
Summer 2021


MID TERM EXAM ASSIGNMENT



Name of the Student: Krishna Gopal Basak
ID No.: 181012015
Department: MSJ
Course Code: MSJ11333
Course Title: Writing for Film and Television
Submission Date: 28 Aug 2021

 Assignment Topic: First Four Steps (out of seven) of Developing a Screenplay


Mark Breakdown and Obtained Marks   

S/N

Item: Step’s Title

Mark Breakdown for Each Step

Step 1

Primary Idea (প্রাথমিক ধারণা)

No Credit

Step 2

Premise (ভিত্তি প্রস্তাবনা)

5.0

Step 3

Synopsis (প্রাথমিক গল্প-বিন্যাস)

8.0

Step 4

Plot Outline (প্লট বা দৃশ্য রূপরেখা)

12.0

 

First Four Steps (out of seven) of Developing a Screenplay

১ম ধাপঃ প্রাথমিক ধারণা(Primary Idea)

"সাটারবাগ"

[ওয়ার্কিং টাইটল]

"ফটোগ্রাফি" আজকের দৈনন্দিন জীবনের সব থেকে বড় অংশ। হাতে মুঠোফোন হওয়ায় এবং স্মার্ট ফোনের বদৌলতে প্রত্যেকটা মানুষই যেন হয়ে উঠেছে একেক জন ফটোগ্রাফার। কিন্তু এর বাইরেও রয়েছে কিছু স্পেশাল মানুষ যারা এই ফটোগ্রাফিকে বেছে নেন পেশা হিসেবে। এবং এই যে ক্যামেরা নিয়ে খেলা, তার পেছনে রয়েছে অনেক অনেক পড়াশুনার বিষয়, কেউ আবার সেটিকেই বেছে নেয় পড়ার মাধ্যম হিসেবে। এরপর হয়ে যায় পুরদস্তর একজন ফটোগ্রাফার।

টাঙ্গাইলের আমতলী শহরের বাসিন্দা রিপন একজন ছোটখাট ফটোগ্রাফার। প্রচন্ড ইচ্ছেশক্তি এবং তার পেশার প্রতি ভালোবআসা থেকে ধীরে ধীরে নিজেকে আত্মপ্রকাশ করছে সে। কিন্তু হঠাৎ করেই একদিন তার কাছে আবির নামের একজন অর্গানাইজার দিয়ে বসে অনেক বড় একটি ইভেন্টের প্রস্তাব। যেখানে রিপন দেখতে পারে তার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার উন্মুক্ত দাড় হিসেবে।

কিন্তু ইভেন্টের চারদিন আগে হাত ফসকে ক্যামেরা নিচে পরে গেলে রিপনের ক্যামেরাটি নষ্ট হয়ে যায়।

এই পরিপেক্ষিতে রিপনের করনীয় কি হবে? যদি এমন অবস্থায় রিপন এই ইভেন্টটি কমপ্লিট করতে চান সে ক্ষেত্রে রিপনের করণীয় কি হবে? যদি রিপন তার নেয়া এই ইভেন্টের দায়িত্ব পূরন করতে চান তাহলে এই গল্পের সম্ভাব্য ভিত্তি প্রস্তাবনা বা প্রিমিস হবে---

 

২.দ্বিতীয় ধাপঃ ভিত্তি প্রস্তাবনা (premise)

"সাটারবাগ"

[ওয়ার্কিং টাইটেল]

যদি এমনটি হয়, একজন আলোকচিত্রকারীর ক্যামেরা নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে কেমন হয়?

 

তৃতীয় ধাপঃ প্রাথমিক গল্প বিন্যাস।(Synopsis)

"সাটারবাগ"

[ওয়ার্কিং টাইটেল]

টাঙ্গাইলের আমতলী শহরের  দুর্গামন্দিরের সামনে ক্যামেরা হাতে দাঁড়িয়ে আছে রিপন। বারবার নানান এঙ্গেল করে ছবি তুলছে দুর্গা এবং আশেপাশের জমায়েত মানুষের। হঠাৎ পেছনে কাধে হাতের স্পর্শষ পরায় পেছন ফিরে তাকায় রিপন। বেশ কেতাদুরস্ত পাঞ্জাবি এবং চুল ব্যাক ব্রাশ করা সুদর্শন যুবক দাঁড়িয়ে আছে। রিপন জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালে কেতাদুরস্ত লোকটি হাত বাড়িয়ে নমস্কার করে বলে তিনি আবির এবং তিনি রিপনের সাথে কথা বলতে চান।  রিপন বিষ্ময় নিয়ে তাকে বলে অবশ্যই সে কথা বলতে চায় তখন আবির হাত বাড়িয়ে মন্দিরের পেছনের বটগাছের দিকে আজ্ঞুল দিয়ে দেখিয়ে বলে বটগাছের নিচে গিয়ে বসে নিরিবিলিতে কথা বলবে। রিপন কোন আপত্তি না করে সেখানে যাবার প্রস্থাব গ্রহন করে। আবির এবং রিপন এরপর বটগাছের নিচে এসে বসে

এবং রিপন আবিরকে তার ডেকে আনার কারণ জিজ্ঞেস করে। আবির তখন বলে তিনি রিপনকে চেনেন। রিপন অবাক হয়ে জিজ্ঞাসু দৃষ্টি হানে আবিরের দিকে। তখন আবির হেসে এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে এখন যে আর মানুষ চেনা খুব  বড় বিষয় নয় এবং সে রিপনের ফটোগ্রাফির পেজটা হর হামেশাই দেখে  এবং এজন্যেই সে রিপনকে চেনে এই ব্যাপারটি খোলসা করে।

রিপন এবার বেশ লজ্জার সুরে সে যে আসলে খুব শখ করে পেজটা খুলেছিল সেটি বলে। এবং ,এছাড়া টুকটাক ইভেন্টো যে করে এবং তার সেসব ছবি সেখানে আপলোড করে সেটাও আবিরকে জানায় রিপন।

আবির তখন রিপনের ছবির প্রশংসা করে এবং  একটা প্রস্তাব সে রিপনকে দিতে চায়। রিপন তখন অবাক হয়ে কেমন প্রস্তাব সে দিতে চায় তা জিজ্ঞেস করে?

আবির তখন হেঁসে বলে সে একটি অর্গানাইজেশন চালায় এবং তার অর্গানাইজেশনের একটি অনুষ্ঠানে সেখানে বৃটেনের বিখ্যাত কথা সাহিত্যিক হেনরি কুপার ১৫ মিনিটের জন্যে আসবেন এবং বক্তৃতা দিবেন। এটা খুব গোপনে হবে কারণ তিনি চান না গণ মাধ্যম এখানে আসুক। এবং আবির চান রিপন এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের কিছু ছবি তুলুক। এর জন্য আবির রিপনকে  ভালো স্যালারিও আমি দিতে রাজি হন। এবং আবির এটাও বলে যেহেতু তার অর্গানাইজেশন তরুণদের নিয়ে কাজ করে সেহেতু রিপনের মত তরুন কেই ই সে তার এই কাজে সামিল করতে চায়।

রিপন অনেকটা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে আবিরের দিকে তারপর সে নিজেকে সৌভাগ্য বান দাবি করে আবিরের ইভেন্টে কাজ করবে বলে কথা দেয়।

আবির তার আসন থেকে উঠতে উঠতে তার কার্ডটি রিপনের হাতে দেয় এবং জানায়, কাজটি ঢাকায় করতে হবে এবং তার পিএ রিপনের এডভান্স কাল পরশু পাঠিয়ে দিবে। আবির রিপনকে তার প্রস্তুতি নিতে বলে এবং সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় চলে এসে কাজ সম্পাদন করার কথাও জানিয়ে দেয়।

রিপন ধন্যবাদ জানিয়ে এবং আবিরের সাথে হ্যান্ডশেক করে বাসার দিকে চলতে শুরু করে।

 

আবির তখন হেঁসে বলে সে একটি অর্গানাইজেশন চালায় এবং তার অর্গানাইজেশনের একটি অনুষ্ঠানে সেখানে বৃটেনের বিখ্যাত কথা সাহিত্যিক হেনরি কুপার ১৫ মিনিটের জন্যে আসবেন এবং বক্তৃতা দিবেন। এটা খুব গোপনে হবে কারণ তিনি চান না গণ মাধ্যম এখানে আসুক। এবং আবির চান রিপন এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের কিছু ছবি তুলুক। এর জন্য আবির রিপনকে ভালো স্যালারিও আমি দিতে রাজি হন। এবং আবির এটাও বলে যেহেতু তার অর্গানাইজেশন তরুণদের নিয়ে কাজ করে সেহেতু রিপনের মত তরুন কেই ই সে তার এই কাজে সামিল করতে চায়।

দ্বিতলা বাসার শোবার ঘরে রিপন হাতে ক্যামেরা নিয়ে নাড়াচাড়া করছে।  সব গুলো ক্যামেরা পরীক্ষা করে দেখতে হচ্ছে রিপনকে কারণ তার যে চারটা ক্যামেরা রয়েছে তার মধ্যে মিররলেস ক্যামেরাটাই তার সব থেকে পছন্দের এবং এটি দিয়েই সে ছবি তুলবে বলে ঠিক করে। ক্যামেরাটা খুব কাছ থেকে ভালো করে দেখে পরীক্ষা করে দেখতে লাগল রিপন।  হঠাৎ আনমনা হতেই কেন যেন হাত ছলকে গেল এবং মিররলেস লেন্স টা মেঝেতে পরে যায় রিপনের হাত থেকে। রিপন ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে আছে নিচের দিকে,নিচের দিকের দৃশ্য মোটেই ভালো নয়, নিচে পরে ক্যামেরার লেন্স টা ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে আছে।

হঠাৎ আনমনা হতেই কেন যেন হাত ছলকে গেল এবং মিররলেস লেন্স টা মেঝেতে পরে যায় রিপনের হাত থেকে। রিপন ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে আছে নিচের দিকে, নিচের দিকের দৃশ্য মোটেই ভালো নয়, নিচে পরে ক্যামেরার লেন্স টা ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে আছে।

সকাল বেলা খাবার টেবিলে সবাই বসে আছে, রিপনের বাবা আব্দুর রহমান সকালের সংবাদ পত্রিকা পড়ছেন,তিনি একজন অবশর প্রাপ্ত সরকারি স্কুল শিক্ষক।রিপন এসে টেবিলে বসায় রহমান রিপনকে বলে কেন রিপনের চোখ মুখ অমন শুকিয়ে গেছে এবং রাতে সে  ঘুমমুয়েছিল কিনা। রিপন মাথা নেড়ে জানায় তার কিছু হয়নি। রিপনের বাবা আব্দুর রহমান ছেলের দিকে কিছুক্ষন চেয়ে থেকে আবার পত্রিকায় মন দিতে গেল। রিপনের মা মিসেস জুলেখা বেগম গরম খিচুরীর থালা রিপনের সামনে রেখে টেবিলের অন্যপাশে গিয়ে নিজের প্লেট নিয়ে বসলেন। রিপনকে না খেয়ে চুপ চাপ চিন্তিত মুখে বসে থাকতে দেখে তিনি বললেন, রিপনের কি হয়েছে এবং সে কেন তার খাবার খাচ্ছেনা। রিপন চমকে উঠে তার প্লেটের খাবার খাওয়ার উদ্যগ নেয়। এবার রিপনের বাবা আব্দুর রহমান বললেন রিপন কিছু নিয়ে ভাবছে কিনা,চিন্তিত কেন সে।  বেশ একটু চেপে ধরায় এবার রিপন বলে তার ঘটনা। এরপর রিপন  বলে তার একটা ইভেন্টের কাজ পরেছে,চারদিন পর ঢাকা যেতে হবে।বৃটেনের কথা সাহিত্যিক আসবেন,তার ছবি তুলতে হবে। রিপনের মা খুব উত্তেজিত হয়ে রিপনেকে হেনরি কুপার কিনা জিজ্ঞস করে। রিপন জানায় যে  হেনরি কুপার,যার বই নিয়ে কয়েকদিন আগে হৈচৈ হল খুব,টিভিতে দেখাল তার ইভেন্টেই সে যাচ্ছি।

রিপনের বাবা তখন বলে যে এই ইভেন্ট অনেক ভালো হয়েছে কিন্তু রিপন তাতে চিন্তিত কেন এবং তিনি ছেলেকে বলেন তুমি রিপন যে  ভালো ছবি তুলে সেটা তিনি  জানেন,এতে চিন্তিত হওয়ার কুছু দেখছেন না বলে মনে করেন। রিপন এবার বলে তার ছবি তোলা নিয়ে কোন সমস্যা নেই, সমস্যা তার ক্যামেরা এবং লেন্স। আব্দুর রহিম ভুরু কুচকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস  করেন তিনি তো কিছু বুঝিনা এইসব আসল ঘটনা কি সেটা যেন রিপন বলে।। রিপন এবার মিন মিন করে বলে তার  প্রায় এক লাখ টাকা লাগবে কারণ গতকাল রাতে এক এক্সিডেন্টে তার ক্যামেরা এবং লেন্স দুটোই ড্যামেজ হয়ে গেছে,এখন সে ছবি তুলতে পারবে না ওটা দিয়ে। নতুন লেন্স এবং ক্যামেরা লাগবে। রিপনের বাবা কিছুক্ষন ছেলের দিকে তাকিয়ে বলে  রিপনের মাথার ঠিক আছে কিনা, বাসায় এক বেলা ভালো মন্দ খাবার জুটছেনা,তার পেনশনের টাকায় তিনি টেনে টুনে সংসার চালাচ্ছেন আর রিপন কিনা এখন বলছে এখন এই চারদিনের ভেতর এক লাখ টাকা লাগবে তার। তিনি  এত টাকা এখন দিতে পারবেন না বলে জানান । ছবি তোলার শখ মাথা থেকে রিপনকে নামিয়ে, পড়াশুনাটা করে এরপর বিসিএস দিয়ে চাকরি করে বাবার সংসারের ধরতে বলেন।এরপর  আবার আব্দুর রহমান তার সংবাদ পত্রে চোখ দিতে থাকে।এরপর হঠাৎ রিপনের ফোনএ  একটা কল আসায় রিপনও উঠে পরে,রুমে গিয়ে দেখে তার বন্ধু সুমিত কল দিয়েছে।  রিপন কলটা রিসিভ করে। সুমিত ওপাশ থেকে বলে তারা আগামি শুক্রবার সীতাকুন্ড ট্যুরে যাচ্ছে,রেপন যাবে কিনা।

রিপন খুব ক্ষীন কন্ঠে জানিয়ে দেয় এবারের ট্যুরেও সে যেতে পারবেনা। 

রাত,শোবার ঘরে রিপন তার গিটার নিয়ে টুং টাং আওয়াজ করছে। হঠাৎ মনে হল তার ফ্রেন্ড সার্কেলের সব থেকে ব্যাবসায়ী বিত্তবান বন্ধু আজাদের কথা।রিপন আজাদকে কল দিলে দুইবার রিং হয়ে কলটা ধরে আজাদ। রিপন কুশল বিনিময় করে আজাদকে বলে তার ভীষন জরুরি কথা আছে কিন্তু লজ্জায় সে বলতে পারছেনা। আজাদ বলে যে রিপন যেন একটু তারাতাড়ি কথাটা বলে কারণ সে একটু কাযে ব্যস্থ আছে। রিপন তখন বলে তার একটা ইভেন্ট আছে, ইভেন্টের আগেই ক্যামেরাটা নষ্ট হয়ে গেছে,আজাদ তাকে কি  একটু সাহায্য করতে পারবে কিনা। আজাদ তখন বলে কি রকম সাহায্য রিপন চায়? রিপন বলে তাকে এক লাখ টাকা ধার দিতে হবে  এবং সে আজাদকে ধীরে ধীরে ইভেন্ট করে শোধ করে দিবে।এবং সে এও জানায় এই ইভেন্টটা জন্য ভীষন ভাবে জরুরি। আজাদ কিছুক্ষন চুপ থেকে রিপন কে বলে তারা এই ১ম থেকে এই যে ৪র্থ বর্ষে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের, কত গুলা ট্যুর তারা দিয়েছে,রিপন জানে কিনা সেটা। রিপন ট্যুরের সাথে ক্যামেরার কি সম্পর্ক ভেবে না পেয়ে মুখ কুচকে বলে অনেক গুলোই তো তারা ট্যুর দিয়েছে। আজাদ এবার ফোনের ওপাশ থেকে হেসে বলে এই এতগুলো ট্যুরে রিপম একটাতেও যেতে পারে নি, কারণ রিপনের  নাকি টাকা ম্যানেজ হয় না। তাহলে রিপন আজাদের কাছে এক লাখ টাকা ধার চেয়ে কিভাবে বলছে শোধ করে দিবে। রিপন কিছু বলেনা,আসলেই ব্যপারটা তাই, বাবার কাছে অনেক তদবির করে আগের ক্যামেরটা কিনে নেয়ার পর রিপন আর কখনো  ট্যুরে যায়নি, আর অন্য কোন কিছুই কিনেনি,কারণ রিপন জানে ওই টাকাটা বাবা কিভাবে ম্যানেজ করেছিল। এরপর আজাদ আর কোন কথা না বলেই রিপনের মুখের উপর কলটা কেটে দেয়।

রাত, শোবার ঘরে রিপন তার গিটার নিয়ে টুং টাং আওয়াজ করছে। হঠাৎ মনে হল তার ফ্রেন্ড সার্কেলের সব থেকে ব্যাবসায়ী বিত্তবান বন্ধু আজাদের কথা।রিপন আজাদকে কল দিলে দুইবার রিং হয়ে কলটা ধরে আজাদ। রিপন কুশল বিনিময় করে আজাদকে বলে তার ভীষন জরুরি কথা আছে কিন্তু লজ্জায় সে বলতে পারছেনা। আজাদ বলে যে রিপন যেন একটু তারাতাড়ি কথাটা বলে কারণ সে একটু কাযে ব্যস্থ আছে। রিপন তখন বলে তার একটা ইভেন্ট আছে, ইভেন্টের আগেই ক্যামেরাটা নষ্ট হয়ে গেছে, আজাদ তাকে কি একটু সাহায্য করতে পারবে কিনা।

সকাল বেলা, রিপনের ঘুম ভাঙ্গল করা এলার্মের আওয়াজে।  দ্রুত ফ্রেশ হয়ে কল দিল রিহান কে, রিহান রিপনকে ইভেন্ট গুলোতএ কাজে সাহায্য করে। রিহান কল ধরেই বলল সে রেডি,সে তার বাসায় আসছে। রিপন ফ্রিজের কাছে গিয়ে পানি খেয়ে দেখে এখনো কেউ উঠেনি ঘুম থেকে। রিপন তাই ঘরের দরজায় বসে রিহানের অপেক্ষা করতে থাকে। কুছুক্ষনের মধ্যেই  রিহান আসলে রিপন দ্রুত রিহানকে ঘরে নিয়ে গিয়ে বসায় এবং ব্যাগ খুলে তার ক্যামেরার অবস্থা দেখায়। রিহান ক্যামেরা হাতে বসে আছে এবং অবাক চোখে চেয়ে আছে রিপনের দিকে। এবার রিপন বলে যা সে দেখছে সেটাই বাস্তব, সেদিন কিভাবে হাত ছলকে ক্যামেরাটা পরল রেপন বুঝতে পারিনাই বলে রিপন।। এবং সে বলে এখন ক্যামেরা নাই, কিভাবে তারা এই দায়িত্ব যেটা নিয়েছি সেটা থেকে ফেরত আসবে। রিপন এও বলে যে তার কাছে এত টাকাও নেই যে সে নতুন আরেকটা কিনবে। কাল আজাদকে কল দেয়ায় সে রিপনকে যা কথা শুনিয়েছে তা ভেবেই এখন তার মাথা ঠুকতে ইচ্ছা করছে এই ভেবে যে সে কেন ওকে কল দিয়েছিল।

রিহান রিপনের কাধে হাত দেয়ে বলে রিপন যেন এভাবে ভেঙ্গে না পরে।ব্যবস্থা একটা হবেই। রিপন বলে আর মাত্র দুইটা দিন বাকি আছে, কিভাবে সে এটার ব্যবস্থা করবে। সে এই ইভেন্টের মত ইভেন্টের ই স্বপ্ন দেখেছে প্রতিবার, এগুলো নিজেকে মেলে ধরার মত ইভেন্ট বলে সে মনে করে।তার ভাগ্য অনেক খারাপ বলে মন খারাপ করে।রিহান রিপনের কাধে হাত রাখে এবং দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস নেয় শুধু।

রাতে খাবার টেবিলে রিপন,আব্দুর রহিম এবং জুলেখা বেগম খেতে বসেছে। যথারিতি রিপন চিন্তিত মুখে ভাত নাড়ছে। আব্দুর রহিম চেয়ার থেকে উঠে যেতে যেতে রিপনকে বলে রাতে শোবার আগে আমার ঘরে যেন রিপন একবার আসে,কিছু জরুরি কথা তিনি বলবে। আর দ্রুত নিজের ভাত শেষ করতে রিপনকে নির্দেষ দেন। এ কথা বলেই আব্দুর রহিম নিজের ঘরে প্রস্থান করে। রিপন কিছুক্ষন অনিহা থাকা সত্তেও বসে ভাত গুলো শেষ করে এবং  হাত ধুয়ে নিজের রুমে ফেরত যাবার মুহুর্তে পেছন ফেরে বাবার রুমে প্রবেশ করে। রিপন ঘরে গেলে তার বাবা তার বিছানার পাশে চেয়ারটা দেখিয়ে রিপনকে বসতে বলে। রিপন বসলে তিনি বলেন যে তিনি খুব অল্প বেতনের চাকরি করেন, তারপরেও রিপন যখন  যা চাইত তিনি দেয়ার চেষ্টা করেছেন সব সময়। এবারের এই বিপদটা থেকে তিনি হয়ত পারছেন না রিপনকে উদ্ধার করতে, এবং তিনি এও বলেন ইভেন্ট বাদ দিয়ে বিসিএস নিয়ে বসতে। এখন থেকে প্রস্তুতি নাতে, জীবনে একটা ভালো চাকরি নিয়ে এই সংসারটার হাল যেন রিপন ধরে। তিনি বলেন তার বয়স বেড়ে যাচ্ছে। রিপনকে চুপ করে থাকতে দেখে আব্দুর রহিম রিপনকে এরপর রুমে যেতে বলেন।

রিপন ঘরে গেলে তার বাবা তার বিছানার পাশে চেয়ারটা দেখিয়ে রিপনকে বসতে বলে। রিপন বসলে তিনি বলেন যে তিনি খুব অল্প বেতনের চাকরি করেন, তারপরেও রিপন যখন  যা চাইত তিনি দেয়ার চেষ্টা করেছেন সব সময়। এবারের এই বিপদটা থেকে তিনি হয়ত পারছেন না রিপনকে উদ্ধার করতে, এবং তিনি এও বলেন ইভেন্ট বাদ দিয়ে বিসিএস নিয়ে বসতে। এখন থেকে প্রস্তুতি নাতে, জীবনে একটা ভালো চাকরি নিয়ে এই সংসারটার হাল যেন রিপন ধরে। তিনি বলেন তার বয়স বেড়ে যাচ্ছে। রিপনকে চুপ করে থাকতে দেখে আব্দুর রহিম রিপনকে এরপর রুমে যেতে বলেন।

পরের দিন বিকাল বেলা রিপন আরো বেশি চিন্তিত হয়ে ছাদে হাটাহাটি করছে। কারণ আগামীকাল ইভেন্ট, তার ক্যামেরা ম্যানেজ হয়নি,কিন্রু সে আবিরকে ব্যপারটি জানাতে পারছেনা।এই ইভেন্টের সাথে তার ক্যারিয়ারেরো অনেক বেশি সংযুক্ত। এই ইভেন্টটিতে ও সফল হলে আবিরের সাথে সে কাজ করতে পারত পার্মানেন্টলি। হঠাৎ আবিরের মনে হল তার বাবাই ঠিক,তার মত মধ্যবিত্ত ছেলেদের আসলে এইসব স্বপ্ন থাকার কোন মানে হয়না। রিপন সহসা ভেবে নেয় যে আবিরকে কল দিয়ে সে ইভেন্টটা করতে পারবেনা বলে জানিয়ে দিবে। এই ভেবে যখনি সে তার পকেট থেকে ফোন বেড় করতে যাবে, পেছন থেকে মিসেস জুলেখা বেগম এসে রিপনকে বলে নিচে রিপনের বাবা ডাকছে।

নিচে ডাইনিং টেবিলে রিপন তার বাবা আব্দুর রহিমের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। দাড়িয়েই রিপন বলে তার বাবা রাতে  যা বলেছিলেন সে  সেটা  নিয়ে ভেবেছে। এবং রিপন এও বলে সে  ছাদে গিয়েছিলাম মিঃ আবিরকে কল দিতেই। ইভেন্টটা সে করবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আব্দুর রহিম ছেলের দিকে মুখ তুলে তাকায়। রিপনকে ইশারায় চেয়ারে বসতে বলে। রিপন চেয়ারে বসলে আব্দুর রহিম একটা হলুদ প্যাকেট হাতে তুলে নিয়ে বলে এই প্যাকেট টা রিপন দেখতে পারছেকিনা। রিপন চুপ করে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায় বাবার দিকে। আব্দুর রহিম এবার জানান এই প্যাকেটে রিপনের স্বপ্ন বন্দি করে রেখে দিতে চেয়েছিলেন,কিন্তু তারপর তার মনে হল স্বপ্ন বন্দি করে রেখে কি লাভ যদি সেটা আকাশে উড়তেই না পারে। রিপন আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে আছে তার বাবার দিকে,বাবা এসব কি বলছে।

এবার আব্দুর রহিম বলে দুইদিন থেকে তিনি রিপনকে দেখছিলেন, স্বপ্নের পেছনে রিপনের আকুলতা তার নিজের যৌবনে ফিরিয়ে নিয়ে গেল। এই প্যাকেটে এক লাখ টাকা আছে বলে তিনি রিপনকে তার স্বপ্ন পূরন করতে বলে।

চেয়ার থেকে উঠে এসে আব্দুর রহিম রিপনের হাতে টাকার ব্যাগটা ধরিয়ে দিয়ে বলে এটা নিয়ে আজকেই ঢাকায় যেন যায় এবং জিনিসপত্র গুলো কিন। ইভেন্ট শেষ করে কাল বাসায় ফিরিও।আর গোপনে কথা বলতে যদি চাও তাহলে তোমার ফোনের সাউন্ডটা কমায় দিয়ে কথা বলিও,আর আজাদকে বলিও ওর বিয়ের ছবি তুমি ফ্রিতে তুলে দিবে। এই কথা বলে রিপনের দিকে চেয়ে আব্দুর রহিম হাসি দিয়ে রিপনের কাধ ঝাকিয়ে নিজের রুমের দিকে চলে যান।

রিপন চেয়ারে বসলে আব্দুর রহিম একটা হলুদ প্যাকেট হাতে তুলে নিয়ে বলে এই প্যাকেট টা রিপন দেখতে পারছেকিনা। রিপন চুপ করে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায় বাবার দিকে। আব্দুর রহিম এবার জানান এই প্যাকেটে রিপনের স্বপ্ন বন্দি করে রেখে দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তারপর তার মনে হল স্বপ্ন বন্দি করে রেখে কি লাভ যদি সেটা আকাশে উড়তেই না পারে। রিপন আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে আছে তার বাবার দিকে, বাবা এসব কি বলছে।

এবার আব্দুর রহিম বলে দুইদিন থেকে তিনি রিপনকে দেখছিলেন, স্বপ্নের পেছনে রিপনের আকুলতা তার নিজের যৌবনে ফিরিয়ে নিয়ে গেল। এই প্যাকেটে এক লাখ টাকা আছে বলে তিনি রিপনকে তার স্বপ্ন পূরন করতে বলে।

 

উদ্দীপক ঘটনাঃ

প্রথম দ্বন্ধবিন্দুঃ

মধ্য বিন্দুঃ

দ্বিতীয় দন্ধবিন্দুঃ

ক্লাইমেক্সঃ

 

৪. চতুর্থ ধাপঃ প্লট বা দৃশ্য রুপরেখা।

"সাটারবাগ"

[ওয়ার্কিং টাইটেল]

 

এক্ট ১(প্রারম্ভিক পর্যায়)

১.দুর্গামন্দিরের সামনে ক্যামেরা হাতে দাঁড়িয়ে আছে রিপন।

২.নানান এঙ্গেল করে রিপন ছবি তুলছে দুর্গা এবং আশেপাশের জমায়েত মানুষের।

৩.হঠাৎ পেছনে কাধে হাতের স্পর্শষ পরায় পেছন ফিরে তাকায় রিপন।

৪.বেশ কেতাদুরস্ত পাঞ্জাবি এবং চুল ব্যাক ব্রাশ করা সুদর্শন যুবক আবির হাত বাড়িয়ে নমস্কার জানায়।

৫.আবির এবং রিপন  বটগাছের নিচে বসে আছে।

৬.আবির তার অর্গানআইজেশনের একটি অনুষ্ঠানে বৃটেনের বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক হেনরি কুপারের ছবি তোলার জন্য রিপনকে প্রস্তাব দেয়।

৭.রিপন ধন্যবাদ জানিয়ে এবং আবিরের সাথে হ্যান্ডশেক করে বাসার দিকে চলতে শুরু করে।

 

এক্ট ২(মধ্যম পর্যায়)

১.দ্বিতলা বাসার শোবার ঘরে রিপন হাতে ক্যামেরা নিয়ে নাড়াচাড়া করছে।

২.মিরর লেস ক্যামেরাটি হাতে তুলে নিয়ে দেখতে থাকে রিপন।

৩.হঠাৎই হাত ছলকে ক্যামেরাটি নিচে মেঝেতে পরে দুই টুকরো হয়ে যায় লেন্সটি।

৪.রিপনের বাবা রহমান সকালের সংবাদ পত্রিকা পড়ছেন,এবং রিপন এসে টেবিলে তার পাশে বসল।

৫. রিপনকে চিন্তিত এবং না খেতে দেখে রিপনের কি হয়েছে জানতে চায় রিপনের বাবা আব্দুর রহিম।

৬. রিপন তার ভেজ্ঞে যাওয়া ক্যামেরার কথা বলে এবং তার এক লাখ টাকা প্রয়োজনের বিষয়টিও জানায়।

৭. আব্দুর রহিম টাকা দিতে না পারার বিষয়টি রিপনকে জানিয়ে দেয়।

৮.রিপনের ফোনে তার বন্ধু সুমিত কল দেয়ায় সে উঠে তার রুমের দিকে যায় এবং সুমিতকে বলে সে  এবারো ট্যুরে যেতে পারবেনা।

৯.রিপন তার বিত্তবান বন্ধু আজাদকে কল দিয়ে তার সমস্যার কথা জানিয়ে টাকা ধার চাইলে আজাদ তাকে অপমান করে কল কেটে দেয়।

 

এক্ট ৩(সমাপ্তি পর্যায়)

১. সকালে ঘুম থেকে উঠে রিপন তার বন্ধু রিহানকে কল দিলে রিহান বলে সে তার বাসায় আসছে।

২.রিহান বাসায় আসলে রিপন তার সমস্যার কথা বলে এবং দুজনেই বেশ মন খারাপ করে।

৩.রাতে খাবার টেবিলে রিপন সহ তার পরিবার খেতে বসেছে।

৪. রিপনকে আব্দুর রহিম খাওয়া শেষ এ তার রুমে যেতে বলে প্রস্থান করেন।

৫.রিপন খাওয়া শেষ এ আব্দুর রহিমের ঘরে গেলে তিনি রিপনকে ফটোগ্রাফি ছেড়ে পড়াশুনায় মন দিতে বলেন।

৬.বিকাল বেলায় রিপন ছাদে হাটাহাটি করে আবিরকে কল দিয়ে ইভেন্ট না করার অপরাগতা প্রকাশ করার ইচ্ছা পোষন করতেই রিপনের মা মিসেস জুলেখা জানান নিচে রিপনের বাবা ডাকছে।

৭. ডাইনিংয়ে হলুদ প্যাকেট হাতে বসে আছেন রিপনের বাবা আব্দুর রহিম,রিপন তার সামনের চেয়ারে এসে বসে।

৮. আব্দুর রহিম হলুদ প্যাকেটটি রিপনের হাতে দিয়ে ম্যানেজ হওয়া টাকার ব্যপারে বলেন এবং ক্যামেরা কিনতে বলেন।

৯. রিপনের কাধে হাত রেখে রিপনকে সাহস দিয়ে আব্দুর রহিম প্রস্থান করেন।

 

 


Name of the Student: Krishna Gopal Basak

ID No.: 181012015                              Department: MSJ

Course Code:  MSJ11333                   Course Title: Writing for Film and Television

Submission Date: 30 Sep 2021


Final Exam Assignment

Assignment Topic: Last Three Steps (out of seven) of Developing a Screenplay


Mark Breakdown and Obtained Marks

S/N

Item: Step’s Title

Mark Breakdown for Each Step

Step 5

Film Story Treatment (পূর্ণাঙ্গ গল্প-বিন্যাস)

15

Step 6

Step Outline (গল্পের দৃশ্যক্রম বর্ণনা)

-

Step 7

Master Scene Script (মাস্টার সিন স্ক্রিপ্ট/চলচ্চিত্র চিত্রনাট্য)

20


Last Three Steps (out of seven) of Developing a Screenplay

 

Step 5: Film Story Treatment (পূর্ণাঙ্গ গল্প-বিন্যাস)

'সাটারবাগ"

[ওয়ার্কিং টাইটল]

টাঙ্গাইলের আমতলী শহরের  দুর্গামন্দিরের সামনে ক্যামেরা হাতে দাঁড়িয়ে আছে রিপন। বারবার নানান এঙ্গেল করে ছবি তুলছে দুর্গা এবং আশেপাশের জমায়েত মানুষের। হঠাৎ পেছনে কাধে হাতের স্পর্শষ পরায় পেছন ফিরে তাকায় রিপন। বেশ কেতাদুরস্ত পাঞ্জাবি এবং চুল ব্যাক ব্রাশ করা সুদর্শন যুবক দাঁড়িয়ে আছে। রিপন জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালে কেতাদুরস্ত লোকটি হাত বাড়িয়ে নমস্কার করে বলে তিনি আবির এবং তিনি রিপনের সাথে কথা বলতে চান।  রিপন বিষ্ময় নিয়ে তাকে বলে অবশ্যই সে কথা বলতে চায় তখন আবির হাত বাড়িয়ে মন্দিরের পেছনের বটগাছের দিকে আজ্ঞুল দিয়ে দেখিয়ে বলে বটগাছের নিচে গিয়ে বসে নিরিবিলিতে কথা বলবে। রিপন কোন আপত্তি না করে সেখানে যাবার প্রস্থাব গ্রহন করে। আবির এবং রিপন এরপর বটগাছের নিচে এসে  বসে

 এবং রিপন আবিরকে তার ডেকে আনার কারণ জিজ্ঞেস করে। আবির তখন বলে তিনি রিপনকে চেনেন। রিপন অবাক হয়ে জিজ্ঞাসু দৃষ্টি হানে আবিরের দিকে। তখন আবির হেসে এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে এখন যে আর মানুষ চেনা খুব  বড় বিষয় নয় এবং সে রিপনের ফটোগ্রাফির পেজটা হর হামেশাই দেখে  এবং এজন্যেই সে রিপনকে চেনে এই ব্যাপারটি খোলসা করে।

রিপন এবার বেশ লজ্জার সুরে সে যে আসলে খুব শখ করে পেজটা খুলেছিল সেটি বলে। এবং ,এছাড়া টুকটাক ইভেন্টো যে করে এবং তার সেসব ছবি সেখানে আপলোড করে সেটাও আবিরকে জানায় রিপন।

আবির তখন রিপনের ছবির প্রশংসা করে এবং  একটা প্রস্তাব সে রিপনকে দিতে চায়। রিপন তখন অবাক হয়ে কেমন প্রস্তাব সে দিতে চায় তা জিজ্ঞেস করে?

আবির তখন হেসে বলে সেএকটি অর্গানাইজেশন চালায় এবং তার অর্গানআইজেশনের একটি অনুষ্ঠানে সেখানে বৃটেনের বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক হেনরি কুপার ১৫ মিনিটের জন্যে আসবেন এবং বক্তৃতা দিবেন। এটা খুব গোপনে হবে কারণ তিনি চান না গণমাধ্যম এখানে আসুক। এবং আবির চান রিপন এই ঐতিহাসিক মুহুর্তের কিছু ছবি তুলুক। এর জন্য আবির রিপনকে  ভালো স্যালারিও আমি দিতে রাজি হন। এবং আবির এটাও বলে যেহেতু তার অর্গানআইজেশন তরুনদের নিয়ে কাজ করে সেহেতু রিপনের মত তরুন কেই ই সে তার এই কাজে সামিল করতে চায়।

রিপন অনেকটা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে আবিরের দিকে।তারপর সে নিজেকে সৌভাগ্যবান দাবি করে আবিরের ইভেন্টে কাজ করবে বলে কথা দেয়।

আবির তার আসন থেকে উঠতে উঠতে তার কার্ডটি রিপনের হাতে দেয় এবং জানায়, কাজটি ঢাকায় করতে হবে এবং তার পিএ রিপনের এডভান্স কাল পরশু পাঠিয়ে দিবে। আবির রিপনকে তার প্রস্তুতি নিতে বলে এবং সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় চলে এসে কাজ সম্পাদন করার কথাও জানিয়ে দেয়।

রিপন ধন্যবাদ জানিয়ে এবং আবিরের সাথে হ্যান্ডশেক করে বাসার দিকে চলতে শুরু করে।

দ্বিতলা বাসার শোবার ঘরে রিপন হাতে ক্যামেরা নিয়ে নাড়াচাড়া করছে।  সব গুলো ক্যামেরা পরীক্ষা করে দেখতে হচ্ছে রিপনকে কারণ তার যে চারটা ক্যামেরা রয়েছে তার মধ্যে মিররলেস ক্যামেরাটাই তার সব থেকে পছন্দের এবং এটি দিয়েই সে ছবি তুলবে বলে ঠিক করে। ক্যামেরাটা খুব কাছ থেকে ভালো করে দেখে পরীক্ষা করে দেখতে লাগল রিপন।  হঠাৎ আনমনা হতেই কেন যেন হাত ছলকে গেল এবং মিররলেস লেন্স টা মেঝেতে পরে যায় রিপনের হাত থেকে। রিপন ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে আছে নিচের দিকে,নিচের দিকের দৃশ্য মোটেই ভালো নয়, নিচে পরে ক্যামেরার লেন্স টা ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে আছে।

 

সকাল বেলা খাবার টেবিলে সবাই বসে আছে, রিপনের বাবা আব্দুর রহমান সকালের সংবাদ পত্রিকা পড়ছেন,তিনি একজন অবশর প্রাপ্ত সরকারি স্কুল শিক্ষক।রিপন এসে টেবিলে বসায় রহমান রিপনকে বলে কেন রিপনের চোখ মুখ অমন শুকিয়ে গেছে এবং রাতে সে  ঘুমমুয়েছিল কিনা। রিপন মাথা নেড়ে জানায় তার কিছু হয়নি। রিপনের বাবা আব্দুর রহমান ছেলের দিকে কিছুক্ষন চেয়ে থেকে আবার পত্রিকায় মন দিতে গেল। রিপনের মা মিসেস জুলেখা বেগম গরম খিচুরীর থালা রিপনের সামনে রেখে টেবিলের অন্যপাশে গিয়ে নিজের প্লেট নিয়ে বসলেন। রিপনকে না খেয়ে চুপ চাপ চিন্তিত মুখে বসে থাকতে দেখে তিনি বললেন, রিপনের কি হয়েছে এবং সে কেন তার খাবার খাচ্ছেনা। রিপন চমকে উঠে তার প্লেটের খাবার খাওয়ার উদ্যগ নেয়। এবার রিপনের বাবা আব্দুর রহমান বললেন রিপন কিছু নিয়ে ভাবছে কিনা,চিন্তিত কেন সে।  বেশ একটু চেপে ধরায় এবার রিপন বলে তার ঘটনা। এরপর রিপন  বলে তার একটা ইভেন্টের কাজ পরেছে,চারদিন পর ঢাকা যেতে হবে।বৃটেনের কথা সাহিত্যিক আসবেন,তার ছবি তুলতে হবে। রিপনের মা খুব উত্তেজিত হয়ে রিপনেকে হেনরি কুপার কিনা জিজ্ঞস করে। রিপন জানায় যে  হেনরি কুপার,যার বই নিয়ে কয়েকদিন আগে হৈচৈ হল খুব,টিভিতে দেখাল তার ইভেন্টেই সে যাচ্ছি।

রিপনের বাবা তখন বলে যে এই ইভেন্ট অনেক ভালো হয়েছে কিন্তু রিপন তাতে চিন্তিত কেন এবং তিনি ছেলেকে বলেন তুমি রিপন যে  ভালো ছবি তুলে সেটা তিনি  জানেন,এতে চিন্তিত হওয়ার কুছু দেখছেন না বলে মনে করেন। রিপন এবার বলে তার ছবি তোলা নিয়ে কোন সমস্যা নেই, সমস্যা তার ক্যামেরা এবং লেন্স। আব্দুর রহিম ভুরু কুচকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস  করেন তিনি তো কিছু বুঝিনা এইসব আসল ঘটনা কি সেটা যেন রিপন বলে।। রিপন এবার মিন মিন করে বলে তার  প্রায় এক লাখ টাকা লাগবে কারণ গতকাল রাতে এক এক্সিডেন্টে তার ক্যামেরা এবং লেন্স দুটোই ড্যামেজ হয়ে গেছে,এখন সে ছবি তুলতে পারবে না ওটা দিয়ে। নতুন লেন্স এবং ক্যামেরা লাগবে। রিপনের বাবা কিছুক্ষন ছেলের দিকে তাকিয়ে বলে  রিপনের মাথার ঠিক আছে কিনা, বাসায় এক বেলা ভালো মন্দ খাবার জুটছেনা,তার পেনশনের টাকায় তিনি টেনে টুনে সংসার চালাচ্ছেন আর রিপন কিনা এখন বলছে এখন এই চারদিনের ভেতর এক লাখ টাকা লাগবে তার। তিনি  এত টাকা এখন দিতে পারবেন না বলে জানান । ছবি তোলার শখ মাথা থেকে রিপনকে নামিয়ে, পড়াশুনাটা করে এরপর বিসিএস দিয়ে চাকরি করে বাবার সংসারের ধরতে বলেন।এরপর  আবার আব্দুর রহমান তার সংবাদ পত্রে চোখ দিতে থাকে।এরপর হঠাৎ রিপনের ফোনএ  একটা কল আসায় রিপনও উঠে পরে,রুমে গিয়ে দেখে তার বন্ধু সুমিত কল দিয়েছে।  রিপন কলটা রিসিভ করে। সুমিত ওপাশ থেকে বলে তারা আগামি শুক্রবার সীতাকুন্ড ট্যুরে যাচ্ছে,রেপন যাবে কিনা। রিপন খুব ক্ষীন কন্ঠে জানিয়ে দেয় এবারের ট্যুরেও সে যেতে পারবেনা। 

রাত,শোবার ঘরে রিপন তার গিটার নিয়ে টুং টাং আওয়াজ করছে। হঠাৎ মনে হল তার ফ্রেন্ড সার্কেলের সব থেকে ব্যাবসায়ী বিত্তবান বন্ধু আজাদের কথা।রিপন আজাদকে কল দিলে দুইবার রিং হয়ে কলটা ধরে আজাদ। রিপন কুশল বিনিময় করে আজাদকে বলে তার ভীষন জরুরি কথা আছে কিন্তু লজ্জায় সে বলতে পারছেনা। আজাদ বলে যে রিপন যেন একটু তারাতাড়ি কথাটা বলে কারণ সে একটু কাযে ব্যস্থ আছে। রিপন তখন বলে তার একটা ইভেন্ট আছে, ইভেন্টের আগেই ক্যামেরাটা নষ্ট হয়ে গেছে,আজাদ তাকে কি  একটু সাহায্য করতে পারবে কিনা। আজাদ তখন বলে কি রকম সাহায্য রিপন চায়? রিপন বলে তাকে এক লাখ টাকা ধার দিতে হবে  এবং সে আজাদকে ধীরে ধীরে ইভেন্ট করে শোধ করে দিবে।এবং সে এও জানায় এই ইভেন্টটা জন্য ভীষন ভাবে জরুরি। আজাদ কিছুক্ষন চুপ থেকে রিপন কে বলে তারা এই ১ম থেকে এই যে ৪র্থ বর্ষে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের, কত গুলা ট্যুর তারা দিয়েছে,রিপন জানে কিনা সেটা। রিপন ট্যুরের সাথে ক্যামেরার কি সম্পর্ক ভেবে না পেয়ে মুখ কুচকে বলে অনেক গুলোই তো তারা ট্যুর দিয়েছে। আজাদ এবার ফোনের ওপাশ থেকে হেসে বলে এই এতগুলো ট্যুরে রিপম একটাতেও যেতে পারে নি, কারণ রিপনের  নাকি টাকা ম্যানেজ হয় না। তাহলে রিপন আজাদের কাছে এক লাখ টাকা ধার চেয়ে কিভাবে বলছে শোধ করে দিবে। রিপন কিছু বলেনা,আসলেই ব্যপারটা তাই, বাবার কাছে অনেক তদবির করে আগের ক্যামেরটা কিনে নেয়ার পর রিপন আর কখনো  ট্যুরে যায়নি, আর অন্য কোন কিছুই কিনেনি,কারণ রিপন জানে ওই টাকাটা বাবা কিভাবে ম্যানেজ করেছিল। এরপর আজাদ আর কোন কথা না বলেই রিপনের মুখের উপর কলটা কেটে দেয়।

সকাল বেলা, রিপনের ঘুম ভাঙ্গল করা এলার্মের আওয়াজে।  দ্রুত ফ্রেশ হয়ে কল দিল রিহান কে, রিহান রিপনকে ইভেন্ট গুলোতএ কাজে সাহায্য করে। রিহান কল ধরেই বলল সে রেডি,সে তার বাসায় আসছে। রিপন ফ্রিজের কাছে গিয়ে পানি খেয়ে দেখে এখনো কেউ উঠেনি ঘুম থেকে। রিপন তাই ঘরের দরজায় বসে রিহানের অপেক্ষা করতে থাকে। কুছুক্ষনের মধ্যেই  রিহান আসলে রিপন দ্রুত রিহানকে ঘরে নিয়ে গিয়ে বসায় এবং ব্যাগ খুলে তার ক্যামেরার অবস্থা দেখায়। রিহান ক্যামেরা হাতে বসে আছে এবং অবাক চোখে চেয়ে আছে রিপনের দিকে। এবার রিপন বলে যা সে দেখছে সেটাই বাস্তব, সেদিন কিভাবে হাত ছলকে ক্যামেরাটা পরল রেপন বুঝতে পারিনাই বলে রিপন।। এবং সে বলে এখন ক্যামেরা নাই, কিভাবে তারা এই দায়িত্ব যেটা নিয়েছি সেটা থেকে ফেরত আসবে। রিপন এও বলে যে তার কাছে এত টাকাও নেই যে সে নতুন আরেকটা কিনবে। কাল আজাদকে কল দেয়ায় সে রিপনকে যা কথা শুনিয়েছে তা ভেবেই এখন তার মাথা ঠুকতে ইচ্ছা করছে এই ভেবে যে সে কেন ওকে কল দিয়েছিল।

রিহান রিপনের কাধে হাত দেয়ে বলে রিপন যেন এভাবে ভেঙ্গে না পরে।ব্যবস্থা একটা হবেই। রিপন বলে আর মাত্র দুইটা দিন বাকি আছে, কিভাবে সে এটার ব্যবস্থা করবে। সে এই ইভেন্টের মত ইভেন্টের ই স্বপ্ন দেখেছে প্রতিবার, এগুলো নিজেকে মেলে ধরার মত ইভেন্ট বলে সে মনে করে।তার ভাগ্য অনেক খারাপ বলে মন খারাপ করে।রিহান রিপনের কাধে হাত রাখে এবং দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস নেয় শুধু।

রাতে খাবার টেবিলে রিপন,আব্দুর রহিম এবং জুলেখা বেগম খেতে বসেছে। যথারিতি রিপন চিন্তিত মুখে ভাত নাড়ছে। আব্দুর রহিম চেয়ার থেকে উঠে যেতে যেতে রিপনকে বলে রাতে শোবার আগে আমার ঘরে যেন রিপন একবার আসে,কিছু জরুরি কথা তিনি বলবে। আর দ্রুত নিজের ভাত শেষ করতে রিপনকে নির্দেষ দেন। এ কথা বলেই আব্দুর রহিম নিজের ঘরে প্রস্থান করে। রিপন কিছুক্ষন অনিহা থাকা সত্তেও বসে ভাত গুলো শেষ করে এবং  হাত ধুয়ে নিজের রুমে ফেরত যাবার মুহুর্তে পেছন ফেরে বাবার রুমে প্রবেশ করে। রিপন ঘরে গেলে তার বাবা তার বিছানার পাশে চেয়ারটা দেখিয়ে রিপনকে বসতে বলে। রিপন বসলে তিনি বলেন যে তিনি খুব অল্প বেতনের চাকরি করেন, তারপরেও রিপন যখন  যা চাইত তিনি দেয়ার চেষ্টা করেছেন সব সময়। এবারের এই বিপদটা থেকে তিনি হয়ত পারছেন না রিপনকে উদ্ধার করতে, এবং তিনি এও বলেন ইভেন্ট বাদ দিয়ে বিসিএস নিয়ে বসতে। এখন থেকে প্রস্তুতি নাতে, জীবনে একটা ভালো চাকরি নিয়ে এই সংসারটার হাল যেন রিপন ধরে। তিনি বলেন তার বয়স বেড়ে যাচ্ছে। রিপনকে চুপ করে থাকতে দেখে আব্দুর রহিম রিপনকে এরপর রুমে যেতে বলেন।

পরের দিন বিকাল বেলা রিপন আরো বেশি চিন্তিত হয়ে ছাদে হাটাহাটি করছে। কারণ আগামীকাল ইভেন্ট, তার ক্যামেরা ম্যানেজ হয়নি,কিন্রু সে আবিরকে ব্যপারটি জানাতে পারছেনা।এই ইভেন্টের সাথে তার ক্যারিয়ারেরো অনেক বেশি সংযুক্ত। এই ইভেন্টটিতে ও সফল হলে আবিরের সাথে সে কাজ করতে পারত পার্মানেন্টলি। হঠাৎ আবিরের মনে হল তার বাবাই ঠিক,তার মত মধ্যবিত্ত ছেলেদের আসলে এইসব স্বপ্ন থাকার কোন মানে হয়না। রিপন সহসা ভেবে নেয় যে আবিরকে কল দিয়ে সে ইভেন্টটা করতে পারবেনা বলে জানিয়ে দিবে। এই ভেবে যখনি সে তার পকেট থেকে ফোন বেড় করতে যাবে, পেছন থেকে মিসেস জুলেখা বেগম এসে রিপনকে বলে নিচে রিপনের বাবা ডাকছে।

নিচে ডাইনিং টেবিলে রিপন তার বাবা আব্দুর রহিমের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। দাড়িয়েই রিপন বলে তার বাবা রাতে  যা বলেছিলেন সে  সেটা  নিয়ে ভেবেছে। এবং রিপন এও বলে সে  ছাদে গিয়েছিলাম মিঃ আবিরকে কল দিতেই। ইভেন্টটা সে করবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আব্দুর রহিম ছেলের দিকে মুখ তুলে তাকায়। রিপনকে ইশারায় চেয়ারে বসতে বলে। রিপন চেয়ারে বসলে আব্দুর রহিম একটা হলুদ প্যাকেট হাতে তুলে নিয়ে বলে এই প্যাকেট টা রিপন দেখতে পারছেকিনা। রিপন চুপ করে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায় বাবার দিকে। আব্দুর রহিম এবার জানান এই প্যাকেটে রিপনের স্বপ্ন বন্দি করে রেখে দিতে চেয়েছিলেন,কিন্তু তারপর তার মনে হল স্বপ্ন বন্দি করে রেখে কি লাভ যদি সেটা আকাশে উড়তেই না পারে। রিপন আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে আছে তার বাবার দিকে,বাবা এসব কি বলছে।

এবার আব্দুর রহিম বলে দুইদিন থেকে তিনি রিপনকে দেখছিলেন, স্বপ্নের পেছনে রিপনের আকুলতা তার নিজের যৌবনে ফিরিয়ে নিয়ে গেল। এই প্যাকেটে এক লাখ টাকা আছে বলে তিনি রিপনকে তার স্বপ্ন পূরন করতে বলে।

চেয়ার থেকে উঠে এসে আব্দুর রহিম রিপনের হাতে টাকার ব্যাগটা ধরিয়ে দিয়ে বলে এটা নিয়ে আজকেই ঢাকায় যেন যায় এবং জিনিসপত্র গুলো কিন। ইভেন্ট শেষ করে কাল বাসায় ফিরিও।আর গোপনে কথা বলতে যদি চাও তাহলে তোমার ফোনের সাউন্ডটা কমায় দিয়ে কথা বলিও,আর আজাদকে বলিও ওর বিয়ের ছবি তুমি ফ্রিতে তুলে দিবে। এই কথা বলে রিপনের দিকে চেয়ে আব্দুর রহিম হাসি দিয়ে রিপনের কাধ ঝাকিয়ে নিজের রুমের দিকে চলে যান।


 

Step 6: Step Outline (গল্পের দৃশ্যক্রম বর্ণনা)

'সাটারবাগ'

[ওয়ার্কিং টাইটেল]

 

১.টাঙ্গাইলের আমতলী শহরের  দুর্গামন্দিরের সামনে ক্যামেরা হাতে দাঁড়িয়ে আছে রিপন। বারবার নানান এঙ্গেল করে ছবি তুলছে দুর্গা এবং আশেপাশের জমায়েত মানুষের।

২. হঠাৎ পেছনে কাধে হাতের স্পর্শষ পরায় পেছন ফিরে তাকায় রিপন। বেশ কেতাদুরস্ত পাঞ্জাবি এবং চুল ব্যাক ব্রাশ করা সুদর্শন যুবক দাঁড়িয়ে আছে।

৩.রিপন জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালে কেতাদুরস্ত লোকটি হাত বাড়িয়ে নমস্কার করে বলে তিনি আবির এবং তিনি রিপনের সাথে কথা বলতে চান। 

৪.রিপন বিষ্ময় নিয়ে তাকে বলে অবশ্যই সে কথা বলতে চায় তখন আবির হাত বাড়িয়ে মন্দিরের পেছনের বটগাছের দিকে আজ্ঞুল দিয়ে দেখিয়ে বলে বটগাছের নিচে গিয়ে বসে নিরিবিলিতে কথা বলবে।

৫.রিপন কোন আপত্তি না করে সেখানে যাবার প্রস্থাব গ্রহন করে। আবির এবং রিপন এরপর বটগাছের নিচে এসে  বসে এবং রিপন আবিরকে তার ডেকে আনার কারণ জিজ্ঞেস করে।

৬.আবির তখন বলে তিনি রিপনকে চেনেন। রিপন অবাক হয়ে জিজ্ঞাসু দৃষ্টি হানে আবিরের দিকে। তখন আবির হেসে এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে এখন যে আর মানুষ চেনা খুব  বড় বিষয় নয় এবং সে রিপনের ফটোগ্রাফির পেজটা হর হামেশাই দেখে  এবং এজন্যেই সে রিপনকে চেনে এই ব্যাপারটি খোলসা করে।

৭.রিপন এবার বেশ লজ্জার সুরে সে যে আসলে খুব শখ করে পেজটা খুলেছিল সেটি বলে। এবং ,এছাড়া টুকটাক ইভেন্টো যে করে এবং তার সেসব ছবি সেখানে আপলোড করে সেটাও আবিরকে জানায় রিপন।

৮.আবির তখন রিপনের ছবির প্রশংসা করে এবং  একটা প্রস্তাব সে রিপনকে দিতে চায়। রিপন তখন অবাক হয়ে কেমন প্রস্তাব সে দিতে চায় তা জিজ্ঞেস করে? আবির তখন হেসে বলে সেএকটি অর্গানাইজেশন চালায় এবং তার অর্গানআইজেশনের একটি অনুষ্ঠানে সেখানে বৃটেনের বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক হেনরি কুপার ১৫ মিনিটের জন্যে আসবেন এবং বক্তৃতা দিবেন। এটা খুব গোপনে হবে কারণ তিনি চান না গণমাধ্যম এখানে আসুক। এবং আবির চান রিপন এই ঐতিহাসিক মুহুর্তের কিছু ছবি তুলুক। এর জন্য আবির রিপনকে  ভালো স্যালারিও আমি দিতে রাজি হন। এবং আবির এটাও বলে যেহেতু তার অর্গানআইজেশন তরুনদের নিয়ে কাজ করে সেহেতু রিপনের মত তরুন কেই ই সে তার এই কাজে সামিল করতে চায়।

৯.রিপন অনেকটা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে আবিরের দিকে।তারপর সে নিজেকে সৌভাগ্যবান দাবি করে আবিরের ইভেন্টে কাজ করবে বলে কথা দেয়। আবির তার আসন থেকে উঠতে উঠতে তার কার্ডটি রিপনের হাতে দেয় এবং জানায়, কাজটি ঢাকায় করতে হবে এবং তার পিএ রিপনের এডভান্স কাল পরশু পাঠিয়ে দিবে। আবির রিপনকে তার প্রস্তুতি নিতে বলে এবং সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় চলে এসে কাজ সম্পাদন করার কথাও জানিয়ে দেয়। রিপন ধন্যবাদ জানিয়ে এবং আবিরের সাথে হ্যান্ডশেক করে বাসার দিকে চলতে শুরু করে।

১০.দ্বিতলা বাসার শোবার ঘরে রিপন হাতে ক্যামেরা নিয়ে নাড়াচাড়া করছে।  সব গুলো ক্যামেরা পরীক্ষা করে দেখতে হচ্ছে রিপনকে কারণ তার যে চারটা ক্যামেরা রয়েছে তার মধ্যে মিররলেস ক্যামেরাটাই তার সব থেকে পছন্দের এবং এটি দিয়েই সে ছবি তুলবে বলে ঠিক করে। ক্যামেরাটা খুব কাছ থেকে ভালো করে দেখে পরীক্ষা করে দেখতে লাগল রিপন।  হঠাৎ আনমনা হতেই কেন যেন হাত ছলকে গেল এবং মিররলেস লেন্স টা মেঝেতে পরে যায় রিপনের হাত থেকে। রিপন ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে আছে নিচের দিকে,নিচের দিকের দৃশ্য মোটেই ভালো নয়, নিচে পরে ক্যামেরার লেন্স টা ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে আছে।

১১.সকাল বেলা খাবার টেবিলে সবাই বসে আছে, রিপনের বাবা আব্দুর রহমান সকালের সংবাদ পত্রিকা পড়ছেন,তিনি একজন অবশর প্রাপ্ত সরকারি স্কুল শিক্ষক।রিপন এসে টেবিলে বসায় রহমান রিপনকে বলে কেন রিপনের চোখ মুখ অমন শুকিয়ে গেছে এবং রাতে সে  ঘুমমুয়েছিল কিনা। রিপন মাথা নেড়ে জানায় তার কিছু হয়নি। রিপনের বাবা আব্দুর রহমান ছেলের দিকে কিছুক্ষন চেয়ে থেকে আবার পত্রিকায় মন দিতে গেল।

 

১২.রিপনের মা মিসেস জুলেখা বেগম গরম খিচুরীর থালা রিপনের সামনে রেখে টেবিলের অন্যপাশে গিয়ে নিজের প্লেট নিয়ে বসলেন। রিপনকে না খেয়ে চুপ চাপ চিন্তিত মুখে বসে থাকতে দেখে তিনি বললেন, রিপনের কি হয়েছে এবং সে কেন তার খাবার খাচ্ছেনা। রিপন চমকে উঠে তার প্লেটের খাবার খাওয়ার উদ্যগ নেয়।

১৩. এবার রিপনের বাবা আব্দুর রহমান বললেন রিপন কিছু নিয়ে ভাবছে কিনা,চিন্তিত কেন সে।  বেশ একটু চেপে ধরায় এবার রিপন বলে তার ঘটনা। এরপর রিপন  বলে তার একটা ইভেন্টের কাজ পরেছে,চারদিন পর ঢাকা যেতে হবে।বৃটেনের কথা সাহিত্যিক আসবেন,তার ছবি তুলতে হবে। রিপনের মা খুব উত্তেজিত হয়ে রিপনেকে হেনরি কুপার কিনা জিজ্ঞস করে। রিপন জানায় যে  হেনরি কুপার,যার বই নিয়ে কয়েকদিন আগে হৈচৈ হল খুব,টিভিতে দেখাল তার ইভেন্টেই সে যাচ্ছি।

১৪.রিপনের বাবা তখন বলে যে এই ইভেন্ট অনেক ভালো হয়েছে কিন্তু রিপন তাতে চিন্তিত কেন এবং তিনি ছেলেকে বলেন তুমি রিপন যে  ভালো ছবি তুলে সেটা তিনি  জানেন,এতে চিন্তিত হওয়ার কুছু দেখছেন না বলে মনে করেন। রিপন এবার বলে তার ছবি তোলা নিয়ে কোন সমস্যা নেই, সমস্যা তার ক্যামেরা এবং লেন্স।

১৫. আব্দুর রহিম ভুরু কুচকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস  করেন তিনি তো কিছু বুঝিনা এইসব আসল ঘটনা কি সেটা যেন রিপন বলে।। রিপন এবার মিন মিন করে বলে তার  প্রায় এক লাখ টাকা লাগবে কারণ গতকাল রাতে এক এক্সিডেন্টে তার ক্যামেরা এবং লেন্স দুটোই ড্যামেজ হয়ে গেছে,এখন সে ছবি তুলতে পারবে না ওটা দিয়ে। নতুন লেন্স এবং ক্যামেরা লাগবে। রিপনের বাবা কিছুক্ষন ছেলের দিকে তাকিয়ে বলে  রিপনের মাথার ঠিক আছে কিনা, বাসায় এক বেলা ভালো মন্দ খাবার জুটছেনা,তার পেনশনের টাকায় তিনি টেনে টুনে সংসার চালাচ্ছেন আর রিপন কিনা এখন বলছে এখন এই চারদিনের ভেতর এক লাখ টাকা লাগবে তার। তিনি  এত টাকা এখন দিতে পারবেন না বলে জানান ।

১৬.ছবি তোলার শখ মাথা থেকে রিপনকে নামিয়ে, পড়াশুনাটা করে এরপর বিসিএস দিয়ে চাকরি করে বাবার সংসারের ধরতে বলেন।এরপর  আবার আব্দুর রহমান তার সংবাদ পত্রে চোখ দিতে থাকে।এরপর হঠাৎ রিপনের ফোনএ  একটা কল আসায় রিপনও উঠে পরে,রুমে গিয়ে দেখে তার বন্ধু সুমিত কল দিয়েছে।  রিপন কলটা রিসিভ করে। সুমিত ওপাশ থেকে বলে তারা আগামি শুক্রবার সীতাকুন্ড ট্যুরে যাচ্ছে,রেপন যাবে কিনা। রিপন খুব ক্ষীন কন্ঠে জানিয়ে দেয় এবারের ট্যুরেও সে যেতে পারবেনা। 

১৭.রাত,শোবার ঘরে রিপন তার গিটার নিয়ে টুং টাং আওয়াজ করছে। হঠাৎ মনে হল তার ফ্রেন্ড সার্কেলের সব থেকে ব্যাবসায়ী বিত্তবান বন্ধু আজাদের কথা।রিপন আজাদকে কল দিলে দুইবার রিং হয়ে কলটা ধরে আজাদ। রিপন কুশল বিনিময় করে আজাদকে বলে তার ভীষন জরুরি কথা আছে কিন্তু লজ্জায় সে বলতে পারছেনা।

১৮. আজাদ বলে যে রিপন যেন একটু তারাতাড়ি কথাটা বলে কারণ সে একটু কাযে ব্যস্থ আছে। রিপন তখন বলে তার একটা ইভেন্ট আছে, ইভেন্টের আগেই ক্যামেরাটা নষ্ট হয়ে গেছে,আজাদ তাকে কি  একটু সাহায্য করতে পারবে কিনা। আজাদ তখন বলে কি রকম সাহায্য রিপন চায়? রিপন বলে তাকে এক লাখ টাকা ধার দিতে হবে  এবং সে আজাদকে ধীরে ধীরে ইভেন্ট করে শোধ করে দিবে।

১৯.এবং সে এও জানায় এই ইভেন্টটা জন্য ভীষন ভাবে জরুরি। আজাদ কিছুক্ষন চুপ থেকে রিপন কে বলে তারা এই ১ম থেকে এই যে ৪র্থ বর্ষে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের, কত গুলা ট্যুর তারা দিয়েছে,রিপন জানে কিনা সেটা।

২০. রিপন ট্যুরের সাথে ক্যামেরার কি সম্পর্ক ভেবে না পেয়ে মুখ কুচকে বলে অনেক গুলোই তো তারা ট্যুর দিয়েছে। আজাদ এবার ফোনের ওপাশ থেকে হেসে বলে এই এতগুলো ট্যুরে রিপম একটাতেও যেতে পারে নি, কারণ রিপনের  নাকি টাকা ম্যানেজ হয় না। তাহলে রিপন আজাদের কাছে এক লাখ টাকা ধার চেয়ে কিভাবে বলছে শোধ করে দিবে। রিপন কিছু বলেনা,আসলেই ব্যপারটা তাই, বাবার কাছে অনেক তদবির করে আগের ক্যামেরটা কিনে নেয়ার পর রিপন আর কখনো  ট্যুরে যায়নি, আর অন্য কোন কিছুই কিনেনি,কারণ রিপন জানে ওই টাকাটা বাবা কিভাবে ম্যানেজ করেছিল। এরপর আজাদ আর কোন কথা না বলেই রিপনের মুখের উপর কলটা কেটে দেয়।

২১.সকাল বেলা, রিপনের ঘুম ভাঙ্গল করা এলার্মের আওয়াজে।  দ্রুত ফ্রেশ হয়ে কল দিল রিহান কে, রিহান রিপনকে ইভেন্ট গুলোতএ কাজে সাহায্য করে। রিহান কল ধরেই বলল সে রেডি,সে তার বাসায় আসছে। রিপন ফ্রিজের কাছে গিয়ে পানি খেয়ে দেখে এখনো কেউ উঠেনি ঘুম থেকে। রিপন তাই ঘরের দরজায় বসে রিহানের অপেক্ষা করতে থাকে।

২২. কুছুক্ষনের মধ্যেই  রিহান আসলে রিপন দ্রুত রিহানকে ঘরে নিয়ে গিয়ে বসায় এবং ব্যাগ খুলে তার ক্যামেরার অবস্থা দেখায়। রিহান ক্যামেরা হাতে বসে আছে এবং অবাক চোখে চেয়ে আছে রিপনের দিকে। এবার রিপন বলে যা সে দেখছে সেটাই বাস্তব, সেদিন কিভাবে হাত ছলকে ক্যামেরাটা পরল রেপন বুঝতে পারিনাই বলে রিপন।। এবং সে বলে এখন ক্যামেরা নাই, কিভাবে তারা এই দায়িত্ব যেটা নিয়েছি সেটা থেকে ফেরত আসবে। রিপন এও বলে যে তার কাছে এত টাকাও নেই যে সে নতুন আরেকটা কিনবে। কাল আজাদকে কল দেয়ায় সে রিপনকে যা কথা শুনিয়েছে তা ভেবেই এখন তার মাথা ঠুকতে ইচ্ছা করছে এই ভেবে যে সে কেন ওকে কল দিয়েছিল।

২৩.রিহান রিপনের কাধে হাত দেয়ে বলে রিপন যেন এভাবে ভেঙ্গে না পরে।ব্যবস্থা একটা হবেই। রিপন বলে আর মাত্র দুইটা দিন বাকি আছে, কিভাবে সে এটার ব্যবস্থা করবে। সে এই ইভেন্টের মত ইভেন্টের ই স্বপ্ন দেখেছে প্রতিবার, এগুলো নিজেকে মেলে ধরার মত ইভেন্ট বলে সে মনে করে।তার ভাগ্য অনেক খারাপ বলে মন খারাপ করে।রিহান রিপনের কাধে হাত রাখে এবং দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস নেয় শুধু।

২৪.রাতে খাবার টেবিলে রিপন,আব্দুর রহিম এবং জুলেখা বেগম খেতে বসেছে। যথারিতি রিপন চিন্তিত মুখে ভাত নাড়ছে। আব্দুর রহিম চেয়ার থেকে উঠে যেতে যেতে রিপনকে বলে রাতে শোবার আগে আমার ঘরে যেন রিপন একবার আসে,কিছু জরুরি কথা তিনি বলবে। আর দ্রুত নিজের ভাত শেষ করতে রিপনকে নির্দেষ দেন। এ কথা বলেই আব্দুর রহিম নিজের ঘরে প্রস্থান করে।

২৫. রিপন কিছুক্ষন অনিহা থাকা সত্তেও বসে ভাত গুলো শেষ করে এবং  হাত ধুয়ে নিজের রুমে ফেরত যাবার মুহুর্তে পেছন ফেরে বাবার রুমে প্রবেশ করে। রিপন ঘরে গেলে তার বাবা তার বিছানার পাশে চেয়ারটা দেখিয়ে রিপনকে বসতে বলে। রিপন বসলে তিনি বলেন যে তিনি খুব অল্প বেতনের চাকরি করেন, তারপরেও রিপন যখন  যা চাইত তিনি দেয়ার চেষ্টা করেছেন সব সময়। এবারের এই বিপদটা থেকে তিনি হয়ত পারছেন না রিপনকে উদ্ধার করতে, এবং তিনি এও বলেন ইভেন্ট বাদ দিয়ে বিসিএস নিয়ে বসতে। এখন থেকে প্রস্তুতি নাতে, জীবনে একটা ভালো চাকরি নিয়ে এই সংসারটার হাল যেন রিপন ধরে। তিনি বলেন তার বয়স বেড়ে যাচ্ছে। রিপনকে চুপ করে থাকতে দেখে আব্দুর রহিম রিপনকে এরপর রুমে যেতে বলেন।,

২৬.পরের দিন বিকাল বেলা রিপন আরো বেশি চিন্তিত হয়ে ছাদে হাটাহাটি করছে। কারণ আগামীকাল ইভেন্ট, তার ক্যামেরা ম্যানেজ হয়নি,কিন্রু সে আবিরকে ব্যপারটি জানাতে পারছেনা।এই ইভেন্টের সাথে তার ক্যারিয়ারেরো অনেক বেশি সংযুক্ত। এই ইভেন্টটিতে ও সফল হলে আবিরের সাথে সে কাজ করতে পারত পার্মানেন্টলি। হঠাৎ আবিরের মনে হল তার বাবাই ঠিক,তার মত মধ্যবিত্ত ছেলেদের আসলে এইসব স্বপ্ন থাকার কোন মানে হয়না।

২৭.রিপন সহসা ভেবে নেয় যে আবিরকে কল দিয়ে সে ইভেন্টটা করতে পারবেনা বলে জানিয়ে দিবে। এই ভেবে যখনি সে তার পকেট থেকে ফোন বেড় করতে যাবে, পেছন থেকে মিসেস জুলেখা বেগম এসে রিপনকে বলে নিচে রিপনের বাবা ডাকছে।

২৮.নিচে ডাইনিং টেবিলে রিপন তার বাবা আব্দুর রহিমের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। দাড়িয়েই রিপন বলে তার বাবা রাতে  যা বলেছিলেন সে  সেটা  নিয়ে ভেবেছে। এবং রিপন এও বলে সে  ছাদে গিয়েছিলাম মিঃ আবিরকে কল দিতেই। ইভেন্টটা সে করবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আব্দুর রহিম ছেলের দিকে মুখ তুলে তাকায়। রিপনকে ইশারায় চেয়ারে বসতে বলে। রিপন চেয়ারে বসলে আব্দুর রহিম একটা হলুদ প্যাকেট হাতে তুলে নিয়ে বলে এই প্যাকেট টা রিপন দেখতে পারছেকিনা।

২৯.রিপন চুপ করে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায় বাবার দিকে। আব্দুর রহিম এবার জানান এই প্যাকেটে রিপনের স্বপ্ন বন্দি করে রেখে দিতে চেয়েছিলেন,কিন্তু তারপর তার মনে হল স্বপ্ন বন্দি করে রেখে কি লাভ যদি সেটা আকাশে উড়তেই না পারে। রিপন আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে আছে তার বাবার দিকে,বাবা এসব কি বলছে।

৩০.এবার আব্দুর রহিম বলে দুইদিন থেকে তিনি রিপনকে দেখছিলেন, স্বপ্নের পেছনে রিপনের আকুলতা তার নিজের যৌবনে ফিরিয়ে নিয়ে গেল। এই প্যাকেটে এক লাখ টাকা আছে বলে তিনি রিপনকে তার স্বপ্ন পূরন করতে বলে।

৩১.চেয়ার থেকে উঠে এসে আব্দুর রহিম রিপনের হাতে টাকার ব্যাগটা ধরিয়ে দিয়ে বলে এটা নিয়ে আজকেই ঢাকায় যেন যায় এবং জিনিসপত্র গুলো কিন। ইভেন্ট শেষ করে কাল বাসায় ফিরিও।আর গোপনে কথা বলতে যদি চাও তাহলে তোমার ফোনের সাউন্ডটা কমায় দিয়ে কথা বলিও,আর আজাদকে বলিও ওর বিয়ের ছবি তুমি ফ্রিতে তুলে দিবে। এই কথা বলে রিপনের দিকে চেয়ে আব্দুর রহিম হাসি দিয়ে রিপনের কাধ ঝাকিয়ে নিজের রুমের দিকে চলে যান।

 


Step 7: Master Scene Script (মাস্টার সিন স্ক্রিপ্ট/চলচ্চিত্র চিত্রনাট্য)

 

ফেইড ইনঃ

বাহিরঃ দূর্গামন্দীর, ক্যামেরা হাতে রিপন ছবি তুলছে জমায়েত মানুষের।

 

বাহিরঃ (অনস্ক্রিন)

রিপনের কাধে হাত রাখলেন আবির। 

বাহিরঃ (অনস্ক্রিন)

রিপন জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে আবিরের দিকে তাকাবে।

আবির হাত বাড়িয়ে দিয়ে-

আবিরঃ নমস্কার আমি আবির,আপনার সাথে কিছু কথা ছিল।

 

বাহিরঃ(অনস্ক্রিন)

আবিরঃ ওই বটগাছটার পেছনে ভালো বসবার জায়গা আছে,চলুন তবে বসেই কথা বলি যদি আপত্তি না থাকে আপনার।

 

বাহিরঃ(অনস্ক্রিন)

রিপনঃ জি এখন বলুন তবে,আমাকে ডেকে আনার কারণ।

 

বাহিরঃ(অনস্ক্রিন)

আবিরঃ আপনি আমাকে হয়তো চিনেন না কিন্তু আমি কিন্তু মশাই আপনাকে খুব ভালো চিনি।

রিপনঃ তাইনাকি কিভাবে?

আবিরঃ এখন প্রযুক্তির যুগে কি আর কিছু লুকান থাকে দাদা, আপনার ফেসবুক পেজ থেকেই চিনি,দারুন ছবি তুলেন আপনি।

 

বাহিরঃ(অন স্ক্রিন)

রিপনঃ পেজটা খুব শখের বসে খুলেছিলাম ভাই,একদম শুরু থেকে টুকটাক যা ছবি তুলতাম তাই বসিয়ে দিতাম।

 

বাহিরঃ(অনস্ক্রিন)

আবিরঃ নাহ দাদা,আপনি সত্যি ই ভীষন ভালো ছবি তুলেন। আপনার জন্য একটা প্রস্তাব আছে আমার।

রিপনঃ কি রকম প্রস্তাব?

আবিরঃ হেনরি কুপারের নাম শুনেছেন?

রিপনঃ হ্যা,তার নাম আবার কে শুনেনি,যা বিখ্যাত লোক উনি।

আবিরঃ হ্যা, আমি একটা অর্গানাইজেশন চালাই,সেখানে তিনি ১৫ মিনিটের জন্যে আসবেন।আপনাকে ছবি তুলতে হবে।

রিপনঃ কি বলেন ভাই,এত বড় দায়িত্ব

আবিরঃ এর জন্যে আমি আপনাকে ভালো স্যালারিও দিব।

 

বাহির(অন্সক্রিন)

রিপনঃআমি আসলেই খুবই সৌভাগ্যবান মনে করছি নিজেকে,আমি ইভেন্টে কাজ করব।

আবিরঃ এই নিন আমার কার্ড, আর ইভেন্টটি কিন্তু ঢাকাতেই হবে,মনে রাখবেন।

আর কাল আমার পিএ আপনাকে এডভান্স দিয়ে যাবেন।

রিপনঃ ধন্যবাদ দাদা।

রাতঃ (অন স্ক্রিন) দ্বীতল বাসার শোবার ঘরঃ

রিপন অবাক এবং হতভমম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে ভাজ্ঞা ক্যামেরার দিকে।

 

 

সকাল বেলাঃখাবার টেবিল (অনস্ক্রিন)

আব্দুর রহমানঃ কি ব্যপার মুখ চোখ শুকিয়ে গেছে মনে হচ্ছে,রাতে ঘুমাওনি ঠিক মত নাকি?

রিপনঃ মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দেয় ঘুমিয়েছে।

 

খাবার হাতে জুলেখা বেগম(অনস্ক্রিন)

জুলেখা  বেগমঃ কি ব্যাপার রে রিপন,খাচ্ছিস না যে? গলা খিচুড়ি রান্না দেখলে একদম পাগল হয়ে যাস,আজকে আবার কি হয়েছে,খিচুড়ী কি ভালো হয়নি নাকি?

 

খাবার টেবিল(অনস্ক্রিন)

আব্দুর রহিমঃ তুমি কি কিছু নিয়ে চিন্তা করতেছ? কি হয়েছে বলতো?

রিপনঃ কিছুনা বাবা

আব্দুর রহিমঃ বল,আমি বুঝতেছি কিছু হয়েছে,কি হয়েছে বল।

রিপনঃ একটা ইভেন্টের কাজ পেয়েছি,ঢাকায় যেতে হবে,বৃটএনের কথা সাহিত্যিক আসবেন।

জুলেখা বেগমঃ হেনরি কুপার নাকিরে?

রিপনঃ হ্যা তিনি।

খাবার টেবিলঃ(অনস্ক্রিন)

আব্দুর রহিমঃ এটা তো খুব ভালো কথা, কিন্তু তুমি চিন্তিত কেন?তুমি ত ভালো ছবি তুল ই।

রিপনঃ ছবি তোলা নিয়ে চিন্তিত না আমি বাবা,আমি চিন্তিত ক্যামেরা আর লেন্স নিয়ে।

আব্দুর রহিমঃ কেন,ক্যামেরা আর লেন্সের কি হয়েছে?

রিপনঃ আমার ক্যামেরাটা পরে ভেজ্ঞে গেছে, আমার এক লাখ টাকা লাগবে নতুন ক্যামেরা কিনতে।

আব্দুর রহিমঃ তুমি আমায় হাসালে বাবা, এক বেলা ভালো মন্দ খাবার জুটছেনা আর তুমি বলছ এরি মধ্যে এক লাখ টাকা তোমায় দিতে।এত টাকা আমি কই পাব।

 

খাবার টেবিল(অনস্ক্রিন)

আব্দুর রহিমঃ ছবি তোলার শখ মাথা থেকে নামায় বিসিএস দিয়ে এবার সংসারের হাল ধর। বুড়া হচ্ছি,এরপর আর সংসার কে দেখবে?

 

রাতঃ শোবার ঘর( অনস্ক্রিন)

রিপন গিটার হাতে বসে আছে। ফোনে আজাদ নামে ডায়েল করে।

রিপনঃ তোর সাথে কথা ছিল, লজ্জা পাচ্ছি। কিন্তু বলব কি?

 

সকাল বেলাঃ (অনস্ক্রিন)

রিপন রিহানের অপেক্ষা করছে।

 

সকালঃ শোবার ঘর(অনস্ক্রিন)

রিহানঃ ক্যামেরা কি করে ভাঙ্গল

রিপনঃ এক্সিডেন্টলি হাত থেকে পরে গেছে

রিহানঃ চিন্তা করিস না কোন না কোন উপায় হবেই।

 

রাতঃ খাবার টেবিল(অনস্ক্রিন)

আব্দুর রহিমঃ খাবার খেয়ে আমার রুমে আসিও, জরুরি কথা আছে।

রাতঃ শোবার ঘর(অনস্ক্রিন)

আব্দুর রহিমঃ দাঁড়িয়ে আছ কেন,বস।

দেখ বাবা আমি অল্প বেতনের চাকরি করি সেটা তুমি জান, তাও তুমি একমাত্র ছেলে আমার,যখন যা চেয়েছ দিয়েছি।কিন্তু এই বিপদ থেকে আমি পারছিনা রক্ষা করতে তোমায়। তুমি একটা ভালো চাকরি নিয়ে সংসারের হাল ধর। তুমি কিছু বলবে?

রিপনঃ না বাবা।

আব্দুর রহিমঃঠিক আছে,নিজের রুমে যাও।

 

বিকাল বেলাঃবাসার ছাদ(অনস্ক্রিন)

ছাদে পায়চারি করছে রিপন।

মিসেস জুলেখাঃ এই রিপন তোর বাবা ডাকছে,নিচে আয়।

 

বিকালঃ খাবার টেবিল(অনস্ক্রিন)

রিপনঃ বাবা কাল যা বললা সে বিষয়ে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ছাদে গিয়েছিলাম ই মি আবির কে কল দিতে, ইভেন্টটা করবনা সে বিষয়ে কথা বলতে।

আব্দুর রহিমঃ হল্যদ প্যাকেটটা দেখতে পারতেছ?

 

খাবার টেবিলঃ অনস্ক্রিন

আব্দুর রহিমঃ ওই হলুদ প্যাকেটে তোমার স্বপ্ন বন্দি আছে। স্বপ্ন বন্দি করে রেখে কি লাভ যদি তা আকাশেই উড়তে না পারে?

 

খাবার টেবিলঃঅনস্ক্রিন

আব্দুর রহিমঃঃ এই নাও টাকা, তোমার ইভেন্টের জিনিসপত্র গুলো কিন।

আর হ্যা আজাদকে বলবে ওর বিয়ের ফটোগ্রাফি তুমি ফ্রিতে করে দিবে।


......................................................................................................................................................................

Comments

Popular posts from this blog

Tangail Saree - A interview with Uttam Basak - Introduction to Journalism

Polythene Future - Convergence Communication 1

Cinema Studies Final Term Paper